মো: সাজিদুর রহমান:
এসএসসি পাশ এক বছর আগে ২০১০ সালে শুরু হয় কর্ম জীবন মেশিন মেকানিক হিসেবে। বিভিন্ন সেলাই মেশিন ভালো করা এবং এম্বোডারির কাজ নিয়েই চলে প্রায় ৫-৬ বছর। এরপর কিছু পোশাক বানানো শুরু হয় নিজ বাসায় তারপর একটি ছোট দোকান নেয়া তারপর একটি পুরোনো বাড়ি ভাড়া নিয়ে শুরু হয় জার্সি ফ্যাক্টরির যাত্রা।
বলছিলাম চাঁপাই নবাবগঞ্জ জেলার সদর উপজেলার বালিয়াডাঙ্গা ইউনিয়নের বালিয়াডাঙ্গা বাজারে অবস্থিত জেলার সব চেয়ে বড় জার্সি তৈরি ফ্যাক্টরি মাইনুল গার্মেন্টসের কর্ণধার মোঃ মাইনুল ইসলামের কথা। তার ছোট বেলার পড়ালেখা শুরু হয় মাদ্রাসা দিয়েই এরপর প্রাইমারি স্কুল তারপর আবারো ভর্তি হয় বালিয়াডাঙ্গা দাখিল মাদ্রাসায় সেখান থেকেই সম্পূর্ণ হয় দাখিল/সমমানের পরিক্ষা। এরপর ভর্তি হন হামিদুল্লাহ মহাবিদ্যালয় সেখান থেকে সম্পূর্ণ করেন এইচএসসি পরিক্ষা এবং পরবর্তী তে ডিগ্রিতে ভর্তি হন নামোসংকরবাটি কলেজে যেখান থেকে তার ডিগ্রি সম্পুর্ণ করেন ২০১৭ সালে।
তারা ৩ ভাই বোন সহ বাবা-মাকে নিয়ে ৫ জনের সদস্য বিশিষ্ট পরিবারের বাবা এক পর্যায়ে পরিবারের খরচ হিমসিম খায় তখনি জীবিকার জন্য কাজে নামতে হয় পরিবারের বড় ছেলে মাইনুল কে। শুরুটা হয় এসএসসি পরিক্ষা দেয়ার ঠিক একবছর আগে ২০১০ সালে একজন মেশিন মেকানিক হিসেবে। গ্রামের বিভিন্ন নষ্ট হয়ে যাওয়া সেলাই মেশিন গুলো ঠিক করার মাধ্যমে, এর সাথে এম্বোডারি মেশিন ভালো করা। এভাবেই কেটে যায় প্রায় ৬ বছর। এরপর বাসায় শুরু হয় টি-শার্ট বানানো সেখান থেকেই একটি ছোট্ট দোকান নেয়া হয় দোকানের নাম দেয়া “মাইনুল গার্মেন্টস এন্ড ফ্যাশন হাউস”। সেই দোকান থেকে একটি পুরোনো বাড়ি ভাড়া নিয়ে শুরু নতুন যাত্রা শুরু হুয় নতুন কিছুর। ঢাকা থেকে আনা হয় প্রিন্টিং ও হিটপ্রেশ মেশিন, কিছু টি-শার্ট সেলায় মেশিন। প্রথমে ৮ জন কর্মচারী নিয়ে শুরু হয় যাত্রা। প্রথমে ডিজাইন ও প্রিন্টের কাজ করতেন মাইনুল সাহেব নিজেই। আসতে আসতে প্রচার হওয়া শুরু করে এবং আশে পাশের এলাকা সহ ছড়িয়ে পরে মাইনুল গার্মেন্টের সুনাম।
এসব নিয়ে মাইনুল ইসলামের সাথে কথা বললে তিনি জানান, একটি ছোট্ট দোকান থেকে আজ আল্লাহর রহমতে আজ একটা প্রতিষ্ঠান দাড় করাতে পেরেছি। আমার এখান থেকে ১৩ জন মানুষের সংসার চালানোর ব্যবস্থা হয়ে যায় আলহামদুলিল্লাহ, সব চেয়ে ভালো লাগে যখন জার্সি, টি-শার্ট গুলো আমরা মানুষের হাতে দেই এবং তাদের মুখের হাসি দেখতে পাই এই প্রশান্তিটা অন্য রকম।
বর্তমানে মাইনুল গার্মেটের কর্মচারি সংখ্যা ১৩ জন। যাদের মধ্যে: গ্রাফিক্স ডিজাইনার ২ জন, সেলাই এর জন্য ৭ জন, কাটিং ১ জন, প্রিন্টিং ২ জন, প্রোডাক্ট প্যাকেজিং ১ জন ।
মাইনুল সাহেবের কাছে আমরা জানতে চাই মাসিক কত পিচ প্রোডাক্ট তৈরি করেন এবং ইনকাম সম্পর্কে। তিনি জানান, আমরা মাসে প্রায় ৪৫০০-৫০০০ পিচের উপরে জার্সি তৈরি করি। যেখানে সব মিলিয়ে গড়ে প্রায় ১৫ লক্ষ টাকার উপরে মাসিক বেচাকেনা হয়ে থাকে আমাদের।
তার কাঁচামাল বা কাপড় আমদানি করা হয় ঢাকা থেকে এবং একটি জার্সি তৈরি হতে ৪ টি ধাপ অতিক্রম করে থাকে। প্রথমে কাপড় কাটিং হয় তারপর প্রিন্টিং পরবর্তি ধাপ সেলাই এবং পরিশেষে প্যাকেজিং।
আমরা একদম শেষ অংশে জানতে জানতে চাই, ভবিষ্যত পরিকল্পনা নিয়ে তিনি আমাদের বলেন, খুব তাড়াতাড়ি তারা নতুন মেশিন আনছেন এবং তারা থ্রি পিচ তৈরি এবং প্রিন্টিং শুরু করবেন। মাইনুল গার্মেন্টকে শুধু চাঁপাইনবাবগঞ্জ বা রাজশাহীর মধ্যে সিমাবদ্ধ রাখতে চান না এটিকে সারা বাংলাদেশে ছড়িয়ে দিতে চান।
সত্যি মাইনুল গার্মেন্টস যেকোনো তরুণের জন্য আদর্শ হিসেবে দাঁড়াতে পারে, কিভাবে শুণ্য থেকে সফলতায় পৌছাতে হয় তার উজ্বল তম উদাহরন সম্ভবত মাইনুল ইসলাম।
সম্পাদক ও প্রকাশক মোঃ রাজিব আলী
পুবালী মার্কেট শিরোইল কাচা বাজার রাজশাহী
মোবাইল : ০১৭১২-৪৫৪৬৮০, ০১৭৮৯৩৪৫১৯৬
মেইল : info@prokashkal.com
সর্বস্বত্ব সংরক্ষিত ২০২৪ | সাইট তৈরি করেছে ইকেয়ার