
নিজস্ব প্রতিবেদক:
রাজশাহীতে পরকীয়ার সম্পর্ক থাকায় স্বামীকে মাদক ও অস্ত্র দিয়ে ফাঁসানোর অভিযোগ করেছে ভুক্তভুগী মো মজনু আহমেদ সাগর। মামলার জামিনে যারা সহযোগিতা করেছে তাদের নামে দেওয়া হয় থানায় অভিযোগ। রক্ষা পায়নি পরিবারের সদস্য, সাংবাদিক, পুলিশও ।
২০২৩ সালে সাগরের স্ত্রী মাহবুবা খাতুন (নীলা) এর পরকীয়ার সম্পর্ক থাকায় সাগরের গাড়িতে মাদক ও অস্ত্র রেখে র্যাব দিয়ে ধরিয়ে দেয়। এই মামলার জামিনে সাগরকে সহযোগিতা করায় তার বড় ভাই গোলজার হোসেন মারুফ এর নামে হত্যার হুমকি দেয় এমন অভিযোগ করে নীলা। বিজ্ঞ আদালত তা খারিজ করে দেন।
মজনু আহমেদ সাগর বলেন, আমি পেশায় একজন শিক্ষক । সমাজে আমার একটা সম্মান আছে। কিন্ত আমার সাবেক স্ত্রী মাহবুবা খাতুন নীলা পরকীয়ায় লিপ্ত হয়ে আমার গাড়িতে অস্ত্র ও মাদক রেখে র্যাব দিয়ে ধরিয়ে দেয়। আমি জেলে থাকা অবস্থায় ১ লক্ষ টাকার একটি চেকে আমার স্বাক্ষর জাল করে চেক ডিজোনার করে আমার একটি মামলা দায়ের করে। ভাড়া নেওয়া একটি বাড়িতে আমার প্রতিষ্ঠানের বেঞ্চ-বোর্ডসহ সকল জিনিস বুঝিয়ে নিয়ে স্বাক্ষর করে সকল মালামাল বিক্রি করে দেয়। নগরীর বাটার মোড়ে আমার শেয়ারের একটি কোচিং সেন্টার থেকে ১০ লক্ষ টাকা উত্তোলন করে। তালাকের পর থেকে এখন পর্যন্ত যৌতুক, নির্যাতনসহ একাধিক মামলা দিয়ে আমাকে হয়রানি করে যাচ্ছে।
এছাড়াও নীলার বাবা আমার নামে ৪০ লক্ষ টাকার প্রতারণা মামলা করে। আপনার প্রশ্ন হলো একজন ৩য় শ্রেনীর কর্মচারীর ( রেলওয়ে চীফ ইঞ্জিনিয়ার এর ড্রাইভার) কাছে এতো টাকার উৎস কি? দুদকের বিষয়টি দেখা উচিত।
জানা যায়, থানায় এএসআই রানা তিনি সাগরের পূর্ব পরিচিত হওয়ায় সাগরেকে মিথ্যা মাদক ও অস্ত্র মামলা থেকে বাঁচানোর চেষ্টা করে কিন্তু তাকেও ছাড় দেয়নি সাগরের সাবেক স্ত্রী নীলা। এএসআই রানার নামে সাগরের কাছে রিমান্ড বাঁচানোর জন্য ৫০০০০ হাজার টাকা নেওয়ার অভিযোগ করা হয় কাশিয়াডাঙ্গা এডিসি রুহুলের কাছে।
আর এই তদন্তের দায়িত্ব দেওয়া হয় কাশিয়াডাঙ্গা এসি শ্যামলি রাণী কাছে। পরে এএসআই রানা কে নিয়ে উদ্বোধন কর্মকর্তারা রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে তদন্তে যায়। কারাগারে গিয়ে সাগর কে অফিসিয়াল ভাবে জিজ্ঞাসাবাদ করে আরএমপির কাশিয়াডাঙ্গা জোনের ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তারা। সাগর কাছে কথা বলে জানতে পারে তার সাবেক স্ত্রী এএসআই রানার নামে যে অভিযোগ করছেন তা সম্পন্ন মিথ্যা।
তদন্ত চলাকালীন সাগরের সাবেক স্ত্রী মাহবুবা খাতুন নীলা কে একাধিক বার কাশিয়াডাঙ্গা জনের ডিসি অফিসে ডাকা হয় জিজ্ঞাসাবাদ এর জন্য ৷ সে সময় কাশিয়াডাঙ্গার জোনের তৎকালীন এসি শ্যামলী রাণীর সাথে তর্কে জড়িয়ে পড়েন নীলা। এখানেই শেষ না তার সাগরের মামলার আইও দেওয়া হয় বোয়ালিয়া থানার সিনিয়র আফিসার এসআই মিজান কে তদন্তের স্বার্থে একাধিক বার যেতে হয় নগরীর উপশহরে অবস্থিত সাগরের নিজস্ব এপার্টমেন্টে এ সময় সঠিক তদন্তে হবে বলে এসআই মিজানের নামে দেওয়া মিথ্যা অভিযোগ এসআই মিজান সাগরের রিমান্ডের সময় বোয়ালিয়া থানার সাগরের সাবেক স্ত্রীকে পা দিয়ে টাচ করেছে।
এরপর সাগর সাইন্স একাডেমীর ম্যানেজার পারভেজকে এক লক্ষ টাকা চুরির মামলা করে আদালতে। যে মামলার তদন্ত আদালাত বোয়ালিয়া মডেল থানাকে দেওয়া হয়।
সাগর জেলে যাওয়ার পর নগরীর ডাব তলার মোড় থেকে একটু সামনে অবস্থিত স্পার্ক ভিউ নামে একটি এপার্টমেন্ট আছে সেটাও আত্মসাৎ এর পরিকল্পনা করে নীলা। তার কথা মতো কাজ না করায় সেই অ্যাপার্টমেন্টের সভাপতি সুনামধন্য কেমিস্ট্রি শিক্ষক হাবীবের নামে বোয়ালিয়া থানায় বিশ হাজার প্রতারণার অভিযোগ করে। থানায় ডাকা হয় হাবীব কে সেখানে নীলা হাবীবে কে অপমান করে। নিজের সম্মান রক্ষার্থে হাবীব থানায় নীলা কে বিশ হাজার টাকা দিয়ে চলে যায়।
এরপর আবার নতুন টার্গেট চৈতি নামের তার এক বান্ধবী। তাকে প্রস্তাব দেওয়া হয় সাগর কে ফঁসানোর জন্য। চৈতি সে প্রস্তাব প্রত্যাখ্যান করে। এরপর চৈতি নীলার শত্রু হয়ে যায়। তার নামে দেওয়া চারলক্ষ টাকার মূল্যের স্বর্ণের দুইটি হাতের চুড়ি আত্মসাৎ এর অভিযোগ। পুলিশের চাপে আর সম্মানের ভয়ে চৈতি নীলার সাথে আপোস করতে বাধ্য হয়।
এখানেই ক্ষান্ত হয়নি সে সাগরের কিনে দেওয়া মেট্রো টাওয়ার টু নামের একটি জমির শেয়ার সাগর জেলে যাওয়ার পর নীলা ১৩ লক্ষ টাকা দিয়ে বিক্রয় করে দেয়। সেখানেই টাকা নিয়ে ঝামেলা করে নীলা জমির ক্রেতার নামে নগরীর চন্দ্রিমা থানায় অভিযোগ করে নীলা। সেই অভিযোগের তদন্তভার দেওয়া হয় চন্দ্রিমা থানার তৎকালীন সেকেন্ড অফিসার মোস্তাক কে।
সাগরের জামিনে সাংবাদিক সহযোগিতা করায় সাংবাদিকের নামেও মামলা করেছে নীলা। কিভাবে মামলা দিয়ে ফাঁসানো যাবে এসব বিষয় নিয়ে কথিত সাংবাদিকের সাথে নীলার কথোপকথনের রেকর্ড আমাদের হাতে এসে পৌঁছেছে।
এ বিষয়ে মাহাবুবা খাতুন নীলার মুঠোফোনে যোগাযোগ করা হলে তিনি ফোন রিসিভ করেননি।