
নিজস্ব প্রতিবেদক:
’থিঙ্ক হেলথ, থিঙ্ক ফার্মাসিস্ট’ প্রতিপাদ্যে বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসী বিভাগ উদযাপন করেছে বিশ্ব ফার্মাসিস্ট দিবস ২০২৫।
বৃহস্পতিবার (২৫ সেপ্টেম্বর) সকাল ৯টা ৩০ মিনিটে বিশ্ববিদ্যালয়ের প্লাজা চত্বরে বেলুন ও পায়রা উড়িয়ে দিবসের আনুষ্ঠানিক উদ্বোধন করেন বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. খাদেমুল ইসলাম মোল্যা। উদ্বোধনের পর কেক কাটা হয় এবং শিক্ষার্থী ও উপস্থিত অতিথিদের অংশগ্রহণে বিশ্ববিদ্যালয় প্রাঙ্গণে একটি বর্ণাঢ্য শোভার আয়োজন করা হয়।
উদ্বোধনী অনুষ্ঠানে উপস্থিত ছিলেন দেশের সুপরিচিত ওষুধ শিল্পের অভিজ্ঞ ব্যক্তিত্ব ইবনে সিনা ফার্মাসিউটিক্যালস পিএলসি-এর সিনিয়র জিএম ও হেড অব প্ল্যান্ট মো. মিজানুর রহমান, বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসী বিভাগের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর ড. মো. বাইতুল মোকাদ্দেছুর রহমান, ফার্মেসী বিভাগের শিক্ষক, শিক্ষার্থী ও কর্মকর্তা-কর্মচারীবৃন্দ।
দিবসের দ্বিতীয় পর্বে অডিটোরিয়ামে সেমিনার অনুষ্ঠিত হয় । এতে প্রধান অতিথি হিসেবে বক্তব্য প্রদান করেন বিশ্ববিদ্যালয়ের উপাচার্য প্রফেসর ড. মো. খাদেমুল ইসলাম মোল্যা। তিনি বলেন, ‘ফার্মাসিস্টরা শুধুমাত্র ওষুধ সরবরাহকারী নয়; তারা জনগণের স্বাস্থ্যসেবা এবং নিরাপত্তার ক্ষেত্রে গুরুত্বপূর্ণ ভূমিকা পালন করে। শিক্ষার্থীদের উচিত একাডেমিক জ্ঞানকে প্রায়োগিক গবেষণার সঙ্গে সংযুক্ত করা এবং নতুন উদ্ভাবনী গবেষণায় অংশগ্রহণের মাধ্যমে দেশের ফার্মাসিউটিক্যাল ও স্বাস্থ্যখাতকে সমৃদ্ধ করা। গবেষণার প্রতি মনোযোগ এবং উদ্ভাবনমুখী দক্ষতা অর্জন করলে তারা শুধু শিক্ষার্থীই নয়, দক্ষ পেশাজীবী হিসেবে সমাজে কার্যকর ভূমিকা রাখতে সক্ষম হবেন।’
বিশেষ অতিথি ইবনে সিনা ফার্মাসিউটিক্যালস পিএলসি-এর মো. মিজানুর রহমান বলেন, দেশের ওষুধ শিল্প ইতোমধ্যেই বিশ্বমানে পৌঁছেছে এবং এটি আরও এগিয়ে যাওয়ার জন্য শিক্ষার্থীদের প্রস্তুত থাকা অত্যন্ত গুরুত্বপূর্ণ। শিক্ষার্থীরা ইন্টার্নশিপ, প্রশিক্ষণ ও শিল্পভিত্তিক প্রকল্পে অংশগ্রহণের মাধ্যমে নিজেদের দক্ষতা বৃদ্ধি করতে পারবে এবং ফার্মাসিউটিক্যাল খাতে নিজেদের প্রতিভা প্রয়োগের সুযোগ পাবে। শিল্পখাতের সঙ্গে নিয়মিত সংযোগ ও অভিজ্ঞতা অর্জন তাদের ভবিষ্যতের ক্যারিয়ারকে শক্তিশালী করবে।’
মূল বক্তা রাজশাহী বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসী বিভাগের অধ্যাপক প্রফেসর ড. মো. গোলাম সাদিক বলেন, ‘থিঙ্ক হেলথ, থিঙ্ক ফার্মাসিস্ট’ প্রতিপাদ্য কেবল একটি স্লোগান নয়; এটি আমাদের স্মরণ করিয়ে দেয় যে ফার্মাসিস্টরা মানবস্বাস্থ্যের রক্ষাকারী এবং স্বাস্থ্যসেবার অপরিহার্য অংশ। শিক্ষার্থীদের উচিত একাডেমিক জ্ঞানকে শক্তিশালী করতে গবেষণামূলক প্রকল্পে অংশগ্রহণ, আধুনিক উদ্ভাবনী পদ্ধতি অনুসরণ এবং শিল্প-ভিত্তিক প্রশিক্ষণে যুক্ত হওয়া। এসব কার্যক্রম তাদের শুধু তাত্ত্বিক জ্ঞানেই সীমাবদ্ধ রাখবে না, বরং বাস্তব জীবনের চ্যালেঞ্জ মোকাবেলায় দক্ষ ও উদ্ভাবনী ফার্মাসিস্ট হিসেবে গড়ে তুলবে। এভাবে তারা ভবিষ্যতের ফার্মাসিউটিক্যাল খাতে আরও কার্যকরী ও দক্ষ পেশাজীবী হিসেবে অবদান রাখতে সক্ষম হবেন।’
সেমিনারের শেষে বক্তারা শিক্ষার্থীদের মতামত ও প্রশ্ন-উত্তর পর্ব নেন। শিক্ষার্থীরা তাদের জিজ্ঞাসা এবং ধারণা শেয়ার করেন এবং বক্তারা সেগুলোকে প্রাসঙ্গিক দিকনির্দেশনা ও পরামর্শ দেন।
সেমিনারের সমাপ্তি ঘটে বরেন্দ্র বিশ্ববিদ্যালয়ের ফার্মেসি বিভাগের বিভাগীয় প্রধান প্রফেসর ড. মো. বায়তুল মোকাদ্দেছুর রহমান-এর বক্তব্যের মধ্য দিয়ে। তিনি বলেন, ‘আমাদের শিক্ষার্থীরা যেন শুধুমাত্র ডিগ্রিধারী না হয়ে, দক্ষ ফার্মাসিস্ট হিসেবে সমাজে কার্যকর ভূমিকা রাখতে পারে-এটাই আমাদের সাফল্য।’