আজ- মঙ্গলবার, ৩০শে সেপ্টেম্বর, ২০২৫ খ্রিস্টাব্দ, ১৫ই আশ্বিন, ১৪৩২ বঙ্গাব্দ
Home রাজশাহী চাকরিচ্যুত কারারক্ষী মনিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে যত অভিযোগ 

চাকরিচ্যুত কারারক্ষী মনিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে যত অভিযোগ 

by Prokash Kal
১১৬ views

সাহিদ হাসান:

ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে কারা বিধিবহির্ভূত আচরণ, স্ত্রী নির্যাতন , মাদকসেবন, বিধিবহির্ভূতভাবে মাদকদ্রব্যসহ অন্যন্য অবৈধ দ্রব্য অনুপ্রবেশ ঘটানোসহ একাধিক অভিযোগের প্রেক্ষিতে কারারক্ষী মনিরুল ইসলাম কে চাকরীচ্যুত করা হয়েছে। কারারক্ষী মনিরুল ইসলামের কারারক্ষী নং ৩২০৫৫।

মনিরুল সর্বশেষ রাজশাহী চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা কারাগারে কর্মরত ছিলেন। গত ২৯ অক্টোবর ২০২৪ সালে তাকে বরখাস্ত করা হয়।

কারা অধিদপ্তর সূত্রে জানা যায়, মনিরুল ইসলাম গত ২০ জানুয়ারি ২০২৪ রাজশাহী বিভাগীয় কারা উপ মহাপরিদর্শক দপ্তরে হাজির হয়ে বাড়ীঘর নির্মাণের জন্য রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগার থেকে জয়পুরহাট জেলা কারাগারে বদলির জন্য মৌখিক আবেদন জানান। তার প্রেক্ষিতে ডিআইজি প্রিজন্স তাকে বাড়ীঘর নির্মাণের অর্থ সংস্থানের প্রয়োজনীয় কাগজপত্রসহ আবেদন দাখিল করতে বলে। পরবর্তীতে আবেদন দাখিল করে এবং ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ তারিখে ডিআইজি প্রিজন্স দপ্তরে হাজির হন। ডিআইজি প্রিজন্স তাকে ৬ মাসের জন্য জয়পুরহাট জেলা কারাগারে সংযুক্ত করার মৌখিক নির্দেশ প্রদান করায় তিনি তখন ক্ষিপ্ত হয়ে উঠে এবং কর্কশ কণ্ঠে উচ্চস্বরে বলে “আমি আপনার কথামত জিপিএফ হতে টাকা তুলেছি আমাকে প্রেষণে নয়, জয়পুরহাট জেলা কারাগারে নিয়মিত বদলি করতে হবে, এটা আমার অধিকার।” এছাড়াও পরবর্তীতে কারা বিভাগ তথা কর্মকর্তা-কর্মচারীদের নিয়ে মিথ্যাচার করে নামীয়পত্র লিখে বিভিন্ন সরকারী দপ্তরে প্রেরণ করবেন বলে জানান এবং উর্ধ্বতন কারা কর্মকর্তাদের সাথে অসৌজন্যমূলক আচরণসহ অবাধ্যচরণ করেন।

জানা গেছে, গত ৭ ফেব্রুয়ারি ২০২৪ তারিখ দুপুরে কারা উপ মহাপরিদর্শক কার্যালয়ে উপস্থিত হয়ে কারা উপ মহাপরিদর্শক মহোদয়ের নিকট বদলির জন্য হাজির হন। কথা বলার একপর্যায়ে উত্তেজিত হয়ে কারা উপ মহাপরিদর্শক মহোদয়ের সাথে ঔদ্ধত্যপূর্ণ আচরণ করে কারারক্ষী মনিরুল ইসলাম ।

আরও জানা যায়, রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগার হতে চাঁপাইনবাবগঞ্জ জেলা কারাগারে যাওয়ার পথে প্রাইভেট কারের ভিতরে সাংবাদিকের নিকট ডিআইজি প্রিজন্স রাজশাহী বিভাগ এবং রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারা কর্তৃপক্ষের (সাবেক সিনিয়র জেল সুপার ও জেলার ) বিরুদ্ধে মিথ্যা, বানোয়াট, ভিত্তিহীন ও মানহানিকর অভিযোগ উপস্থাপন করে এবং ভিডিও বার্তা প্রকাশের জন্য প্রদান করেন । চাঁপাইনাবগঞ্জ জেলা কারাগারে যোগদানের পর উক্ত অভিযোগে তার বিরুদ্ধে বিভাগীয় মামলা রুজু করা হয়।

এছাড়াও মনিরুল ইসলামের বিরুদ্ধে রংপুর কেন্দ্রীয় কারাগারে কর্তৃপক্ষের বিনা অনুমতিতে নিরুদ্দেশ থাকায় সাময়িক বরখাস্তসহ বিভাগীয় মামলা রুজু ও শাস্তি প্রদান করা হয়। নাটোরজেলা কারাগারে থাকা অবস্থায় মনিরুলের স্ত্রীর করা একটি অভিযোগে তাকে কঠোরভাবে সতর্ক করা হয়। জামিনের জন্য লেনদেন করায় তাকে সাময়িক বরখাস্তাসহ বিভাগীয় মামলা রুজু হয় এবং বার্ষিক বেতন বৃদ্ধি ৩ বছরের স্থগিত করা হয়। নাটোর জেলা কারাগারে থাকা অবস্থায় স্ত্রীর করা যৌতুক মামলায় ৩ বছরের সশ্রম কারাদণ্ড এবং ১০ হাজার টাকা জরিমানা অনাদায়ে ৬ মাসের কারাদণ্ড হওয়ায় আটক হয় এবং চাকরিচ্যুত হয়। বগুড়া জেলা কারাগারে সিপুজিন ট্যাবলেট সরবরাহ ও প্রশাসন বিরোধী বেনামী পত্র লেখার সাথে জড়িত থাকার অভিযোগে শাস্তি পায় মনিরুল ইসলাম। রাজশাহী কেন্দ্রীয় কারাগারে দেহ তল্লাশী করে নিষিদ্ধ দ্রব্যাদি পাওয়ার অভিযোগে বার্ষিক বেতন স্থগিত করা হয়।

নাম প্রকাশে অনিচ্ছুক একাধিক কারা কর্মকর্তা বলেন, মনিরুল কারা অভ্যান্তরে মাদক প্রবেশ করানোসহ নানা অনিয়ম ও দুনীতির সাথে জড়িত। মনিরুল কে যখন কারা কর্তৃপক্ষের কাছে হাতে ধরা পড়ে। তখন তারা মনিরুলের শক্র হয়ে যায় । কোন প্রকার নিয়ম কানুনের তোয়াক্কা করেনা সে। এছাড়াও ঊর্ধ্বতন কমকর্তাদের সাথে অসদ আচারণ ও তাদের বিরুদ্ধে মিথ্যা অপ্রচার করে বেড়ায় কারারক্ষী মনিরুল।

এ বিষয়ে কারা উপ-মহাপরিদর্শক মোঃ কামাল হোসেন বলেন, মনিরুল ইসলাম ঊর্ধ্বতন কর্মকর্তাদের সাথে কারা বিধিবহির্ভূত আচরণ, স্ত্রী নির্যাতন পরবর্তী স্ত্রী কর্তৃক তার বিরুদ্ধে দায়েরকৃত ফৌজদারী মামলায় অপরাধ প্রমাণিত হওয়ায় ৩ বছরের সশ্রম কারাদণ্ডের প্রেক্ষিতে ১৮ মাস কারাবরণ পরবর্তী ভূল স্বীকার করে আপোষরফার মাধ্যমে মামলা থেকে অব্যাহতি পায় । এসব ছাড়াও অন্যান্য সহকর্মী ও জেল কর্মকর্তাদের সঙ্গে অসদাচরণ, মাদকসেবন, বিধিবহির্ভূতভাবে মাদকদ্রব্যসহ অন্যন্য অবৈধ দ্রব্য অনুপ্রবেশ ঘটানোয় এরপূর্বে ৪ বার সাময়িক বরখাস্ত হয়ে বিভাগীয় মামলায় তদন্তের প্রেক্ষিতে বার্ষিক বেতনবৃদ্ধি স্থগিতসহ বিভিন্ন গুরু ও লঘু শাস্তিপ্রাপ্ত হয়েছেন।

কামাল হোসেন আরও বলেন, মনিরুল আমার কাছ থেকে কিছু অবৈধ সুবিধা চেয়েছে আমি না দেওয়ায় সে আমার নামে মিথ্যাচার ও গুজব ছড়িয়েছে।

মনিরুল ইসলামের করা অভিযোগ সম্পর্কে জানতে চাইলে তৎকালীন জেলার মো নিজাম উদ্দিন জানান, দুর্নীতি করেছি বললেই তো হয়ে যায় না, আমিও যে কারো বিরুদ্ধে বলতে পারি সে দুর্নীতি করেছে কিন্ত সুস্পষ্ট কোনো বিষয় না থাকলে সেটি ভিত্তিহীন। বন্দীদের সিগারেটের বিষয়ে তিনি বলেন, টেন্ডার অনুযায়ী সিগারেট নির্ধারণ হয়। নির্ধারিত সিগারেট কেউ না নিলে আমরা কি করবো। যে কয়জন নিয়েছে সেটার বিল করা হয়েছে।

You may also like

Leave a Comment

শিরোনাম:

সম্পাদক ও প্রকাশক মোঃ রাজিব আলী

পুবালী মার্কেট শিরোইল কাঁচা বাজার রাজশাহী

মোবাইল : ০১৭১২-৪৫৪৬৮০, ০১৭৮৯৩৪৫১৯৬

মেইল : info@prokashkal.com

© ২০২৪ প্রকাশকাল সর্বসত্বাধিকার সংরক্ষিত