
নিজস্ব প্রতিবেদক:
টঙ্গী ময়দানে হামলাকারী সাদপন্থী ওয়াসিফুল ইসলাম ও রাজশাহীর সাদপন্থী নেতা ডা. আমিনুল ইসলাম, প্রিন্সিপাল আবু বকর, প্রফেসর নুরুল ইসলাম, ডা. গোলাম মোর্শেদ, ও সিএন্ডবি মসজিদের ইমাম মাওলানা গোলাম আজম (আবদুল্লাহ) সহ অন্যান্যদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তির দাবী এবং সন্ত্রাসবাদী কার্যকলাপের কারণে রাজশাহী মারকাজ মসজিদে প্রবেশে বারিতসহ সাদপন্থীদের সকল কর্মকাণ্ড স্থায়ীভাবে নিষিদ্ধকরণ দাবীতে সংবাদ সম্মেলন করেছে ওলামা-মাশায়েখ ও তাবলিগের সাথীবৃন্দ।
রোববার (২৯ ডিসেম্বর) বিকেল ৫টায় নগরীর উপশহর মারর্কাস মসজিদ চত্তরে এই সাংবাদিক সম্মেলন অনুষ্ঠিত হয়।
সাংবাদিক সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে জানানো হয়, সবিনয় নিবেদন এই যে, আমরা আপনার পরিচালনাধীন রাজশাহী মহানগরের উলামা মাশায়েখ ও সর্বস্তরের তৌহিদী জনতা।
আপনি নিশ্চয় অবগত আছেন যে, টঙ্গী বিশ্ব ইজতিমাকে সফল করার লক্ষ্যে প্যান্ডেল তৈরী ও মাঠ প্রস্তুত করার কাজে কয়েক হাজার শুরাই নেযামের সাথী টঙ্গী ময়দানে অবস্থান করছিলেন। সরকার ও ছাত্র সমন্বয়কদের সিদ্ধান্ত উপেক্ষা করে গত ১৮- ১২-২০২৪ তারিখে গভীর রাতে নিরস্ত্র ও ঘুমন্ত সাথীদের উপর হামলে পড়ে সাদপন্থী সন্ত্রাসীরা। তারা দেশি বিদেশী ধারাল অস্ত্র, রড-হাতুড়ি ইত্যাদি দ্বারা নিরীহ সাথীদের উপর অতর্কিত হামলা করে। সাদপন্থীদের নৃসংশ হামলায় ইতোমধ্যে আমাদের তিনজন ভাই শাহাদাত বরণ করেছেন (ইন্না লিল্লাহি ওয়া ইন্না ইলাইহি রাজিউন), অসংখ্য সাথী গুরুতর আহত অবস্থায় হাসপাতালে চিকিৎসাধীন আছেন। তাদের অনেকের অবস্থা আশঙ্কাজনক।
উল্লেখ্য যে, ২০১৮ সালের পহেলা ডিসেম্বরেও সাদপন্থী সন্ত্রাসীদের নারকীয় তাণ্ডবে অনেক সাথী শহীদ ও প্রায় পাঁচ সহস্রাধিক সাথী আহত হয়েছিল। এ জাতীয় বর্বরতা দেশ ও বিদেশে ইসলাম ও শান্তিপ্রিয় মুসলমানদের ব্যাপারে ভুল মেসেজ পৌঁছে দিচ্ছে। তাই তাবলিগের নামে এ জাতীয় সন্ত্রাসী কার্যকলাপ বাংলাদেশের মতো একটি শান্তিপ্রিয় মুসলিম দেশে কিছুতেই চলতে দেয়া যায় না।
আশা করি আপনি অবগত আছেন যে, সাদপন্থীদের স্বঘোষিত আমীর দিল্লির মাওলানা সাদ কান্ধলভির বিভিন্ন শরীয়ত-বিরোধী বক্তব্য, নবি-রাসুলগণ সম্পর্কে আপত্তিকর মন্তব্য, সাহাবা কেরামের সমালোচনা ও শরীয়তের অসংখ্য বিধান বিকৃতি ও মনগড়া ব্যাখ্যার কারণে দারুল উলূম দেওবন্দসহ সারা বিশ্বের বিজ্ঞ আলেমগণ তার অনুসরণ ও বয়ানের প্রচার-প্রসারকে নাজায়েজ ঘোষণা দিয়েছেন।
এমতাবস্থায়, আমাদের কিছু দাবী আপনার সদয় বিবেচনায় পেশ করছি-
১) রাতের অন্ধকারে তাবলীগ জামাতের ঘুমন্ত নিরীহ সাথীদের উপর অতর্কিত হামলাকারী সাদপন্থী সন্ত্রাসীদের অবিলম্বে গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি নিশ্চিত করতে হবে।
২) রাজশাহী মহানগর ও রাজশাহী জেলার সকল মসজিদে তাদের কার্যক্রম নিষিদ্ধ করতে হবে।
৩) সাদপন্থী সন্ত্রাসীদের গডফাদার ইঞ্জিনিয়ার ওয়াসিফ, তার ছেলে ওসামা, জিয়া বিন কাসিম, আব্দুল্লাহ মানসুর, রেজা আরিফ,
সায়েম এবং রাজশাহীর সাদপন্থীদের অন্যতম নেতা ডা. আমিনুল ইসলাম, প্রিন্সিপাল আবু বকর, প্রফেসর নুরুল ইসলাম, ডা. গোলাম মোর্শেদ, সিএন্ডবি মসজিদের ইমাম মাওলানা গোলাম আজম (আবদুল্লাহ)সহ সকল গডফাদারকে অনতিবিলম্বে গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শাস্তি দিতে হবে।
৪) রাজশাহী মহানগর ও রাজশাহী জেলা থেকে যেসব সাদপন্থী সন্ত্রাসী ১৮/১২/২০২৪ ইং তারিখে টঙ্গীর ইজতিমা ময়দানে সন্ত্রাস, লুটতরাজ ও হত্যা কার্যক্রমের সাথে জড়িত ছিল তাদের গ্রেফতার ও দৃষ্টান্তমূলক শান্তি দিতে হবে।
৫) যেহেতু গত ২৪.১২.২০২৪ ইং, বাংলা ০৯ পৌষ ১৪৩১ তারিখে স্বরাষ্ট্র মন্ত্রণালয় এর জননিরাপত্তা বিভাগ হতে স্বাক্ষরিত প্রজ্ঞাপন মতে কেবলমাত্র মাওলানা মোহাম্মদ জুবায়ের অনুসারী যাহা তাবলীগ জামাত বাংলাদেশ (শুরাই নেযাম) কাকরাইল মসজিদ, ঢাকায় শুবগুজারিসহ রাত্রিযাপন ও অন্যান্য কার্যক্রম চালাতে পারবে এবং ভারতের মাওলানা সাদ গ্রুপের অনুসারীরা ২৭.১২.২০২৪ ইং তারিখ হতে পরবর্তী নির্দেশ না দেয়া পর্যন্ত প্রবেশে নিষেধাজ্ঞা প্রদানের কারণে সারা বাংলাদেশের মসজিদগুলিতে সাদ গ্রুপের প্রবেশ ও আমল নিষিদ্ধ করতে হবে।
সাংবাদিক সম্মেলনের লিখিত বক্তব্যে পাঠ করেন
রাজশাহী মহানগরীর উলামা মাশায়েখ ও সর্বস্তরের তৌহিদী জনতার পক্ষে আবদুল্লাহ তালহা।